নাউট্টা সেলিমের নকল মসলার ব্যবসায় ইয়াবার গন্ধ!

নিজস্ব প্রতিবেদক :

উখিয়ার গ্রামীণ বিয়েবাড়িতে একসময় বেশ হাঁকডাক ছিলো নর্তকদের, স্থানীয় ভাষায় যাদের ডাকা হয় নাউট্টা নামে।

আঞ্চলিকগানের তালে তালে বিয়ে আসর মাতিয়ে রাখতো তারা, বিনিময়ে পাওয়া সামান্য অর্থ ছিলো জীবিকা নির্বাহের উৎস।

উপজেলার সদরের পাশে ঘিলাতলী গ্রাম, বছর দশক আগেও এই গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ সেলিমের খ্যাতি ছিলো নর্তক হিসেবে।

আশেপাশের গ্রামগুলোতে বিয়ের অনুষ্ঠান হলেই ডাক পেতেন লোকেমুখে নাউট্টা সেলিম হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এই ব্যক্তি।

২০১৪-১৫ সালের দিকে স্থানীয় একটি মরিচকলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন সেলিম, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা ঢলে ঘুরে যায় তাঁর ভাগ্যের চাকা।

নর্তকের পেশা ত্যাগ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মরিচ হলুদ সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় মসলা সরবরাহকের কাজ শুরু করেন তিনি, বছর না পেরোতেও বনে যান মিল মালিক।

সে সময় চাহিদা থাকার সুবাধে মিলের অনুমোদন ছাড়াই খোলা নকল মসলার রমরমা ব্যবসা জমিয়ে তোলার পাশাপাশি রোহিঙ্গা মাদককারবারিদের সাথে সেলিমের সখ্যতা গড়ে ওঠে।

কথিত মসলা সরবরাহ ব্যবসার নেপথ্যে ইয়াবা হয়ে যায় তার মোটা আয়ের উৎস। ডুপ্লেক্স ভিলা,গাড়ি সহ কোটি টাকার অঢেল সম্পদের মালিক সেলিম বর্তমানে বনে গেছেন শ্রমিকদের নেতা।

সম্প্রতি পকেট কমিটির মাধ্যমে রাজাপালং ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি, অভিযোগ আছে টাকার বিনিময়ে নিজের অবৈধ কার্যালাপ আড়াল করতে এই পদ ভাগিয়েছেন।

অভিযোগ আছে, রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহারের মাধ্যমে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় বাস করা সেলিম তার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অব্যাহত রেখেছেন মাদকের কারবার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের এক নেতা জানান, ” সেলিম কখনোই রাজনীতি করে নাই। হঠাৎ উড়ে এসে জুড়ে বসে নেতা হয়ে গেছে। রাজপথে বছরের পর বছর শ্রম দিয়ে আমরা বঞ্চিত হয়েছি।”

কক্সবাজার জেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল্লাহ আনসারী বলেন, ” শ্রমিক লীগ কেটে খাওয়া মানুষের সুশৃঙ্খল সংগঠন, এখানে অসাংগঠনিক কারো নেতৃত্বে আসার সুযোগ নেই। ”

সেলিমের বিষয়ে খতিয়ে দেখতে উখিয়া উপজেলা শ্রমিকলীগ কে নির্দেশ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

অভিযোগ প্রসঙ্গে সেলিম জানতে চাইলে তিনি নিজেকে করদাতা ব্যবসায়ী হিসেবে দাবী করেন। ইয়াবা কারবারের সাথে সম্পৃক্ত নয় উল্লেখ করে সেলিম বলেন,” আমি পরিশ্রম করে এতটুক এসেছি, একটি কুচক্রী মহল আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কেউ এসব বিষয় প্রমাণ করতে পারবেনা।”

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামীম হোসাইন বলেন, ইয়াবা ব্যবসা সহ অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, জিরো টলারেন্স নীতিতে পুলিশ কাজ করছে।